Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
মহাস্থানগড়, পুন্ড্রবর্ধন প্রাচীনতম নগরি
স্থান
শিবগঞ্জ উপজেলা, বগুড়া
কিভাবে যাওয়া যায়
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মহাস্থান বাস স্ট্যান্ড হতে বাস,কার,অটো-টেম্পু,রিক্সা ও ভ্যানযোগে মহাস্থান গড়ে যাওয়া যাবে। উল্লেখ্য যে, বৃহত্তর এই পিকনিক স্পটে থাকা ও খাওয়ার সু-ব্যাবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন এখানে শত শত মানুষ পর্যটন করতে আসে।
বিস্তারিত

মহাস্থানগড়, পুন্ড্রবর্ধন প্রাচীনতম নগরি,শিবগঞ্জ,বগুড়া।

মহাস্থানগড়েরবিস্তীর্ণ ধবংসাবশেষ প্রাচীর পুন্ড্রবর্ধনভূক্তির রাজধানী পুন্ড্রনগরেরসুদীর্ঘ প্রায় আড়াই হাজার বছরের গৌরবোজ্জল ইতিহাসের এক নীরব স্বাক্ষী। এধবংসাবশেষ বগুড়া জেলা শহরের ১৩ কিঃমিঃ উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরেঅবস্থিত। সমগ্র বাংলার সর্বপ্রধান ও সর্বপ্রাচীন এ দূর্গনগরী পর্যায়ক্রমেমাটি ও ইটের বেষ্টনী প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত যা উত্তর দক্ষিনে ১৫২৫ মিঃদীর্ঘ এবং পূর্ব পশ্চিমে ১৩৭০মিঃ প্রশস্থ ও চতুপার্শ্বস্থ সমতল ভূমি হতে৫মিঃ উচু। বেস্টনী প্রাচীর ছাড়াও পূর্ব দিকে নদী ও অপর তিনদিকে গভীর পরিখানগরীর অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্নতাত্বিকনিদর্শন হতে জানা যায় যে, কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য , গুপ্ত এবং পাল শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সমান্তরাজাগণের রাজধানী ছিল। দূর্গের বাইরে উত্তর ,পশ্চিম , দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিম ৭/৮ কিলোমিটারের মধ্যে এখনও বিভিন্ন ধরণের বহু প্রাচীন নিদের্শনরয়েছে যা উপ-শহরের সাক্ষ্য বহন করে। উল্লেখ্য, বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজকহুয়েন সাঙ ভারতবর্ষ ভ্রমণকালে (৬৩৯-৬৪৫) পুন্ড্রনগর পরিদর্শন করেন।প্রখ্যাত বৃটিশ প্রত্নতত্ববিদ স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ খৃষ্টাব্দেমহাস্থান গড়ের ধ্বংসাবশেষকে ফুয়েন সাঙ বর্ণিত পুন্ডু নগর হিসেবে সঠিকভাবেসনাক্ত করেন।

১৯২৮-১৯২৯সালে মহাস্থানগড়ে সর্ব প্রথম প্রত্নতাত্তিক উৎখনন কার্য শুরু করা হয়। এসময় নগরীরর মধ্যে বইরাগির ভিটা মুনির ঘোন ও বাইরে গোবিন্দ ভিটা নামক ৩টিস্থানে খনন করা হয়। দীর্ঘদিন পর ১৯৬০-১৯৬১ সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৮৮ সাল হতেনিয়মিতভাবে দূর্গের বিভিন্ন অংশ উৎখনন করা হয়। ১৯৯৩ হতে বাংলাদেশ ওফ্রান্স সরকার যৌথভাবে মহাস্থানগড় খনন শুরু করায় এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিকগবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্র পায়। প্রথম পর্যায়ে ১৯৯৯ পর্যন্ত পূর্বদূর্গ প্রাচীরের মধ্যবর্তী এলাকায় খনন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০০০ সালথেকে মাজারের পশ্চিম পাশে খনন কাজ করা হচ্ছে।

দীর্ঘসময় ব্যাপি ব্যাপক অনুসন্ধান ও খননের ফলে দুর্গ নগরীর অভ্যন্তরে খৃস্টাব্দচতুর্থ শতক থেকে শুরু করে মুসলিম যুগ পর্যন্ত প্রায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে বসতিনিদর্শন উম্মোচিত হয়েছে। ১৮টি স্তরে প্রাক মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও মুসলিমযুগের কাঁচা পাকা ঘর বাড়ী, রাস্তা, নর্দমা, নালা কুপ, মন্দির, মসজিদ, তোরণ, বুরুজ ইত্যাদি উম্মোচিত হয়েছে। এসব স্থাপত্যিক কাঠামো ছাড়াও আবিস্কৃতহয়েছে। তদানীন্তন নগরজীবনের বিভিন্ন অস্থাবর সাংস্কৃতিক দ্রব্রাদি যেমনমৌর্য যুগের টাপিযুক্ত শিলা খন্ড, ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা ও ছাঁচে ঢালাতাম্র মুদ্রা, ব্লাক এন্ড বেচ চেয়ার, বুলেটেড ওয়ার, উত্তরাঞ্চলীয় কালো মসৃণমৃৎপাত্র, শুংগ বৈশিষ্ট্য মন্ডি পোড়ামাটির ফলক, প্রস্ত্তর ও পোড়ামাটিরমূর্তি স্বল্প মূল্যবান প্রস্ত্তর গুটিকা গোলক, জালের কাঠি এবং মাটির ওধাবত দ্রব্যাদি, প্রচুর সাধারণ মৃৎপাত্র এবং আরবি উৎকীর্ণ লিপিযুক্ত একটিপ্রস্ত্তর ফলক বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

বগুড়াশহর হতে ১৫ কিঃমিঃ দূরেপুন্ড্রবর্ধনের প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু ছিল এইমহাস্থানগড়। বর্তমানে এলাকাটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত।